Monday, November 10, 2014

জিহাদের ফিকহ শিখবেন কার কাছ থেকে ?

Source LINK 
জিহাদের ফিকহ শিখবেন কার কাছ হতে...........................
আমিরুল মূমিনীন ফিল জিহাদ শায়খ আব্দুল্লাহ আযযাম রহিমাহুল্লাহ-র তাফসীর হতে নেওয়া;

শায়খ রহিমাহুল্লাহ বলেন," আমি বহু মানুষের সাথে মিশেছি। বহু আলেমের সাথে কথাবার্তা বলে দেখেছি তারা জিহাদের পরিভাষা সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞান রাখেন না। আমি যখন তাদের বলেছি , বর্তমানের এই পরিস্থিতিতে জিহাদ ফরযে আইন, তখন বিস্ময়ে তাদের চোখ ছানাবড়া হয়ে গেছে । তারা যেন জীবনে এমন কথা শোনেন নি। কিন্ত আমি যখন তাদের সাথে দীর্ঘ আলোচনা করেছি , কথা বলেছি; তখন তারা বুঝেছেন যে জিহাদ ফরযে আইন। আমি অত্যন্ত দৃড়তার সাথে বলতে চাই, শুধুমাত্র ইতিহাস গ্রন্থ পাঠ করে জিহাদের মর্ম উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। জিহাদ বুঝতে হলে জিহাদের ময়দানে আসতে হবে।
তাই উস্তাদ সাইয়্যেদ কুতুব রহিমাহুল্লাহ বলেন-
إن أسرار القران لايفهمها فقيه قاعد بارد
নিশ্চয়ই কুরআনের রহস্য কোন শীতল ঘরকুনো ফকীহ বুঝতে পারবেন না। কারণ, কুরআনের অনেক আয়াত এমন আছে যা মানুষ সহজে বুঝতে পারে না । বিশেষভাবে যদি সে প্রবৃত্তির অনুসারী হয় তাহলে তো সে কিছুতেই তা অনুধাবন করতে পারবে না। তাই কুরআনের সঠিক মর্ম অনুধাবন করার জন্য তাকওয়া অবলম্বন করতে হবে। তাকও্যা ছাড়া কুরআন বুঝা সম্ভব নয়।
আল্লাহ তায়ালা বলেন-
يا أيها الذين آمنوا إن تتقواالله يجعل لكم فرقانا
অর্থাৎ, হে মুমিনরা ! যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করো , তাকওয়া অবলম্বন করো, তাহলে তিনি তোমাদেরকে হক ও বাতিল অনুধাবন করার শক্তি দান করবেন। তাই প্রকৃত সমস্যা ইলমের স্বল্পতার সমস্যা নয়। আসল কথা হলো, কুরআনের আয়াত বুঝতে হলে তাকওয়া অবলম্বন করতে হবে। তাহলে তার সঠিক মর্ম অন্তরে ঢেলে দিবেন। এ জন্য খিলাফত আমলে বাগদাদে মুসলিম সমাজে কোন সমস্যা দেখা দিলে যদি তার সমাধান করা সম্ভব না হতো তখন বলা হতো , তোমরা এই সমস্যাটি সীমান্তে অবস্থিত মুজাহিদদের নিকট পাঠিয়ে দাও। কারণ , তারা আল্লাহর অধিক নৈকট্যশীল বান্দা। সুতরাং আশা করা যায় তাদেরই এ বিষয়ের উত্তর প্রদানের তৌফিক দেওয়া হবে।
আফগানের এই জার্জিতে, পাকতিয়ায় যারা গুলি আর মিসাইলের নিচে বসে আছে , দিনে একশবার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়; এদের অনেকে এমন আছে যে কখনো পেশওয়ারেও যায় নি। রণাঙ্গনেই জীবন কাটিয়ে দিচ্ছে। কেউ যদি তাকে জিহাদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে , সে তখন তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিতে এমন সুন্দর উত্তর দিবে যে তুমি মুগদ্ধ হয়ে যাবে।
এ কারণেই শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ বলেছেন-
لايسأل العلمآ ء الذين ليسو ا في أرض المعر كت عن الجهاد-
অর্থাৎ যেসব আলেমরা কখনো রণাঙ্গনে যায় নি তাদের জিহাদ সম্পর্কে জিজ্ঞাস করো না।
তাই আমি বলি, এদেরকে জিহাদ সম্পর্কে কিছুই জিজ্ঞেস করবে না। বিশেষভাবে যাদের কোন ওজর নেই, কোন বাধা-বিপত্তি নেই। হ্যাঁ , যদি কারো ওজর থাকে তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে মাফ করে দিবেন।
ভেবে দেখতো সেই আলেমের কথা যে নিজে জিহাদের মতো একটি ফরয আমল করছে না। অথচ সে পারে নির্যাতিত-নিপীড়িত মুসলমানদের রক্ষা করতে , তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে । তুমি যদি তাকে জিজ্ঞেস করো, জনাব আপনি কেন এ ফরয আমলটি করছেন না ? তাহলে মনে কর সে উত্তরে বলবে, আমার অসুবিধা আছে, ওজর আছে । আরে ভাই, জিহাদ তো ফরযে আইন । তুমি জিহাদ যাও বা না যাও তার কোন উত্তরই স্পষ্ট হচ্ছে না , পরিষ্কার হচ্ছে না। কারণ সে তো কখনো জিহাদের ময়দানে যায়নি।
তুমি তাকে জিজ্ঞেস করো, আফগানিস্তানে যে জিহাদ চলছে সেখানে নেতৃত্বে কারা আছে ? নিশ্চয়ই সে কিছুই বলতে পারবে না। সে জানেই না কিভাবে জিহাদ শুরু হলো। এখন জিহাদের পরিস্থিতি কি ? আরে সে তো কষ্ট করে একদিনও আফগানিস্তানের মানচিত্রটিও খুলে দেখে নি। সে তো জিহাদ সম্পর্কে কোন প্রচারপত্রও পাঠ করে দেখে নি। কোন মুজাহিদের ভাষনও কোনদিন শোনার চেষ্টা করেনি।আর ঘটনাক্রমে যদি তুমি তার নিকট যাও ও আফগান জিহাদের অবস্থা বর্ণনা করতে চাও তাহলে দেখবে তার শোনার সময়ও নেই। সুতরাং তুমি কিভাবে তাকে জিহাদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে। জিহাদ তো তার স্বভাব পরিপন্থী।
এ ব্যাপারে যদি কেউ বিস্তারিত জানতে আগ্রহী হয় তাহলে তাকে ফতওয়ায়ে ইবনে তাইমিয়া'র চতুর্থ খন্ড অধ্যয়ণ করতে হবে। সেখানে দেখবে, যেসব আলেমরা জিহাদে যায় না তাদের থেকে জিহাদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে না। তবে সন্দেহ নেই যে, তিনি একজন মুসলিম , সত্যবাদী লোক। তবে সন্দেহ নেই যে, একজন আলেমের দ্বারা অবশ্যই তার স্বদেশের বহু মানুষ উপকৃত হয়। কিন্ত তুমি তো তাকে এমন বিষয়ে জিজ্ঞেস করছো যা সে জানে না।
তাফসীরে সূরা তাওবা ; পৃ ৩৩০-৩৩৩

No comments:

Post a Comment