Source LINK
প্রেসক্লাবে এম মুশফিকুর রহমান চৌধুরী সমর্থিত সাথীদের সংবাদ সম্মেলন
ঢাকা: অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা বিষয় নিয়ে তাবলীগ জামাতের দীর্ঘ দিনের মতানৈক্য ও দ্বন্দ্ব নিরসনে পুলিশ উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
ভেতরে ভেতরে দ্বন্দ্ব চললেও সাম্প্রতিক সময়ে তাবলীগের বিভক্তি প্রায় প্রকাশ্যে চলে এসেছে। একই সঙ্গে তাবলীগের নাম ভাঙিয়ে আর্থিক সুবিধা নেয়ার অভিযোগ উঠছে অনেক মুরব্বীর বিরুদ্ধে। শুরা সদস্য সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাৎ, ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। শুরু হয়েছে ক্ষমতার দ্বন্দ্বও। মূলত ওয়াসিফ ইসলামের সঙ্গে বিরোধ অধ্যাপক মুশফিক আহমেদের।
এই বিরোধ মেটাতে পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হকের (আইজিপি) আহ্বানে বৃহস্পতিবার পুলিশ সদরদপ্তরে গিয়েছিলেন অধ্যাপক মুশফিক আহমেদ। দুপুর সাড়ে ১২টা থকে প্রায় ৩টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন অধ্যাপক মুশফিক।
এর আগে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলায় হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এম মুশফিকুর রহমান চৌধুরী সমর্থিত তাবলীগ জামাতের সাথীরা। লিখিত বক্তব্য দেন তাবলীগের সাথী আহমেদ ফজলে আকবর। আরো উপস্থিত ছিলেন- রাকিবুল হাসান, আবু সাইদ মো. লতিফুল আলম, মামুন-উর রশিদ, নারায়নগঞ্জের হাসান হাবিব প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে ওয়াসিফুল ইসলামের অনিয়মের নিয়ে কথা বলেন তারা। সংবাদ সম্মেলন শেষে তারাও পুলিশ সদর দপ্তরে গিয়েছিলেন।
ওয়াসিফের বিরুদ্ধে ২০১২ সালে টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে সরকারি অনুদানের টাকা আত্মসাৎ নিয়ে কথা ওঠে। অভিযোগ রয়েছে, সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম তাবলীগ জামাতের কথা বলে দেশে ও দেশের বাইরে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেন যা ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা রাখেন।
সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম বাংলাদেশ তাবলীগের একজন প্রবীণ ও গুরুত্বপূর্ণ মজলিসে শূরার সদস্য। একই সঙ্গে তিনি ফায়সাল বা আমির।
তাবলীগ জামাতের আমির ওয়াসিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে লিফলেট বিতরণকালে বিভিন্ন সময়ে তাবলীগ কর্মীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে ওয়াসিফুলের লোকজন।
ওয়াসিফুলের বিরুদ্ধে এক পাতার একটি লিফলেট বিতরণ শুরু করে। ওই লিফলেটে ‘ওয়াসিফুলের হাত থেকে তাবলীগ জামাতের কেন্দ্রীয় মসজিদকে রক্ষার’ আহ্বান জানানো হয়। তাতে মাওলানা ওয়াসিফুলের বিরুদ্ধে ২০০ কোটি টাকার দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরা হয়।
পুলিশ সদরদপ্তর থেকে বের হচ্ছেন অধ্যাপক মুশফিকুর
পুলিশ সদরদপ্তর থেকে বেরিয়ে এম মুশফিকুর রহমান চৌধুরী বাংলামেইলকে বলেন, ‘বৈঠকে পুলিশের আইজি, কয়েকজন ডিআইজি উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ তাদেরকে ইজতেমায় লিফলেট বিতরণ করতে নিষেধ করেন। ইজতেমার পরে অনিয়ম নিয়ে লিখিত অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।’
বৈঠকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রমনা জোনের এসি শিবলী নোমান। তাবলীগের আর্থিক বিষয় নিয়ে সমস্যা আছে উল্লখে করলেও বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানেন না বলে জানান শিবলী নোমান।
এদিকে সংবাদ সম্মেলেন লিখিত বক্তব্যে আহমেদ ফজলে আকবর বলেন, ‘ওয়াসিফুল ইসলাম কাকরাইল মসজিদ নির্মাণের নামে দেশে-বিদেশের বিভিন্ন সংস্থা থেকে দু’শত কোটি টাকা টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন। বিদেশ থেকে এসব টাকা সংগ্রহে সহায়তা করেছেন ওয়াসিফুল ইসলামের ছেলে ওসামা ইসলাম। এছাড়া তিনি একটি জাতীয় পত্রিকায় রাজনীতি বিষয়ে প্রবন্ধ লিখেছেন। টুইটারে রাজনীতি বিষয়ে মন্তব্য লিখেছেন। যা তাবলীগের মৌলিক নীতি অনুসরণ করে না।’
তারা বলেন, ওয়াসিকুল ইসলাম তাবলীগের শুরা (কার্যপরিষদ) সদস্য পরিচয় বহাল রেখেই চাঁদাবাজি ও রাজনীতি করে যাচ্ছেন। তিনি রাজনীতিতে অংশগ্রহণের কারণে বিপুল সংখ্যক তাবলীগ সাথীদের সমর্থন পাচ্ছেন, যা তাবলীগের মূলনীতির পরিপন্থি এবং সম্পূর্ণ তাবলীগ বিভ্রান্ত হচ্ছে। এতে যারা বাধা দিচ্ছেন তাদেরকে জেএমবির সদস্য বলে পুলিশের কাছে সোর্পদ করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে ক্ষিপ্ত হয় তারা। এরপরে লিফলেট বিতরণ করে সতর্ক করার চেষ্টা হয়। তখন তাদের ওপর হামলা করা হয়। মারধরের মিশন সম্পন্ন করেন ইঞ্জিয়ার মাহফুজুল হান্নান ও ইঞ্জিয়ার আনিসুর রহমান।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে ওয়াসিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ এনে কাকরাইল মসজিদে লিফলেট বিতরণ করেছেন তাবলীগের অন্য সাথীরা। তখন দুই দফায় ৪৭ জনকে মসজিদের ভেতরে আটকে রেখে মারধর করে রমনা থানা পুলিশে সোপর্দ করে। পরে পুলিশ ৫৪ ধারায় আটক করে জেলহাজতে পাঠায়।
তাবলীগে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, অর্থ কেলেঙ্কারি!
বাংলামেইল২৪ডটকম/ সিএ/ জেএ
দেশ
বৃহস্পতিবার, ০৮ জানুয়ারি ২০১৫ ১৯:১৬তাবলীগের দ্বন্দ্ব নিরসনে পুলিশচৌধুরী আকবর, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
Tabligh Jamaat Representatives |
প্রেসক্লাবে এম মুশফিকুর রহমান চৌধুরী সমর্থিত সাথীদের সংবাদ সম্মেলন
ঢাকা: অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানা বিষয় নিয়ে তাবলীগ জামাতের দীর্ঘ দিনের মতানৈক্য ও দ্বন্দ্ব নিরসনে পুলিশ উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
ভেতরে ভেতরে দ্বন্দ্ব চললেও সাম্প্রতিক সময়ে তাবলীগের বিভক্তি প্রায় প্রকাশ্যে চলে এসেছে। একই সঙ্গে তাবলীগের নাম ভাঙিয়ে আর্থিক সুবিধা নেয়ার অভিযোগ উঠছে অনেক মুরব্বীর বিরুদ্ধে। শুরা সদস্য সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাৎ, ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। শুরু হয়েছে ক্ষমতার দ্বন্দ্বও। মূলত ওয়াসিফ ইসলামের সঙ্গে বিরোধ অধ্যাপক মুশফিক আহমেদের।
এই বিরোধ মেটাতে পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হকের (আইজিপি) আহ্বানে বৃহস্পতিবার পুলিশ সদরদপ্তরে গিয়েছিলেন অধ্যাপক মুশফিক আহমেদ। দুপুর সাড়ে ১২টা থকে প্রায় ৩টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন অধ্যাপক মুশফিক।
এর আগে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলায় হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এম মুশফিকুর রহমান চৌধুরী সমর্থিত তাবলীগ জামাতের সাথীরা। লিখিত বক্তব্য দেন তাবলীগের সাথী আহমেদ ফজলে আকবর। আরো উপস্থিত ছিলেন- রাকিবুল হাসান, আবু সাইদ মো. লতিফুল আলম, মামুন-উর রশিদ, নারায়নগঞ্জের হাসান হাবিব প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে ওয়াসিফুল ইসলামের অনিয়মের নিয়ে কথা বলেন তারা। সংবাদ সম্মেলন শেষে তারাও পুলিশ সদর দপ্তরে গিয়েছিলেন।
ওয়াসিফের বিরুদ্ধে ২০১২ সালে টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে সরকারি অনুদানের টাকা আত্মসাৎ নিয়ে কথা ওঠে। অভিযোগ রয়েছে, সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম তাবলীগ জামাতের কথা বলে দেশে ও দেশের বাইরে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেন যা ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা রাখেন।
সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম বাংলাদেশ তাবলীগের একজন প্রবীণ ও গুরুত্বপূর্ণ মজলিসে শূরার সদস্য। একই সঙ্গে তিনি ফায়সাল বা আমির।
তাবলীগ জামাতের আমির ওয়াসিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে লিফলেট বিতরণকালে বিভিন্ন সময়ে তাবলীগ কর্মীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে ওয়াসিফুলের লোকজন।
ওয়াসিফুলের বিরুদ্ধে এক পাতার একটি লিফলেট বিতরণ শুরু করে। ওই লিফলেটে ‘ওয়াসিফুলের হাত থেকে তাবলীগ জামাতের কেন্দ্রীয় মসজিদকে রক্ষার’ আহ্বান জানানো হয়। তাতে মাওলানা ওয়াসিফুলের বিরুদ্ধে ২০০ কোটি টাকার দুর্নীতির তথ্য তুলে ধরা হয়।
পুলিশ সদরদপ্তর থেকে বের হচ্ছেন অধ্যাপক মুশফিকুর
পুলিশ সদরদপ্তর থেকে বেরিয়ে এম মুশফিকুর রহমান চৌধুরী বাংলামেইলকে বলেন, ‘বৈঠকে পুলিশের আইজি, কয়েকজন ডিআইজি উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ তাদেরকে ইজতেমায় লিফলেট বিতরণ করতে নিষেধ করেন। ইজতেমার পরে অনিয়ম নিয়ে লিখিত অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।’
বৈঠকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন রমনা জোনের এসি শিবলী নোমান। তাবলীগের আর্থিক বিষয় নিয়ে সমস্যা আছে উল্লখে করলেও বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত জানেন না বলে জানান শিবলী নোমান।
এদিকে সংবাদ সম্মেলেন লিখিত বক্তব্যে আহমেদ ফজলে আকবর বলেন, ‘ওয়াসিফুল ইসলাম কাকরাইল মসজিদ নির্মাণের নামে দেশে-বিদেশের বিভিন্ন সংস্থা থেকে দু’শত কোটি টাকা টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন। বিদেশ থেকে এসব টাকা সংগ্রহে সহায়তা করেছেন ওয়াসিফুল ইসলামের ছেলে ওসামা ইসলাম। এছাড়া তিনি একটি জাতীয় পত্রিকায় রাজনীতি বিষয়ে প্রবন্ধ লিখেছেন। টুইটারে রাজনীতি বিষয়ে মন্তব্য লিখেছেন। যা তাবলীগের মৌলিক নীতি অনুসরণ করে না।’
তারা বলেন, ওয়াসিকুল ইসলাম তাবলীগের শুরা (কার্যপরিষদ) সদস্য পরিচয় বহাল রেখেই চাঁদাবাজি ও রাজনীতি করে যাচ্ছেন। তিনি রাজনীতিতে অংশগ্রহণের কারণে বিপুল সংখ্যক তাবলীগ সাথীদের সমর্থন পাচ্ছেন, যা তাবলীগের মূলনীতির পরিপন্থি এবং সম্পূর্ণ তাবলীগ বিভ্রান্ত হচ্ছে। এতে যারা বাধা দিচ্ছেন তাদেরকে জেএমবির সদস্য বলে পুলিশের কাছে সোর্পদ করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলে ক্ষিপ্ত হয় তারা। এরপরে লিফলেট বিতরণ করে সতর্ক করার চেষ্টা হয়। তখন তাদের ওপর হামলা করা হয়। মারধরের মিশন সম্পন্ন করেন ইঞ্জিয়ার মাহফুজুল হান্নান ও ইঞ্জিয়ার আনিসুর রহমান।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে ওয়াসিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ এনে কাকরাইল মসজিদে লিফলেট বিতরণ করেছেন তাবলীগের অন্য সাথীরা। তখন দুই দফায় ৪৭ জনকে মসজিদের ভেতরে আটকে রেখে মারধর করে রমনা থানা পুলিশে সোপর্দ করে। পরে পুলিশ ৫৪ ধারায় আটক করে জেলহাজতে পাঠায়।
তাবলীগে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, অর্থ কেলেঙ্কারি!
বাংলামেইল২৪ডটকম/ সিএ/ জেএ
No comments:
Post a Comment