Source LINK
নাগরিকত্ব বাতিলের দাবি
গাফফার চৌধুরীর বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ইসলামী দলগুলোর
০৫ জুলাই ২০১৫,রবিবার, ২০:১৪
কলামিস্ট আব্দুল গফফার চৌধুরী আল্লাহর ৯৯ নামসহ ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ইসলামী সংগঠনগুলো। তারা বলেছেন, গাফফার চৌধুরী ইসলাম থেকে খারিজ ও মুরতাদ হয়ে গেছেন। তওবা করে পুনরায় ইসলাম গ্রহণ করা ছাড়া তিনি মুসলমান পরিচয় বহন করতে পারবেন না। তাকে গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। তার নাগরিকত্ব বাতিল ও দেশে প্রবেশ করতে না দেয়ার আহবান জানিয়েছেন ইসলামী দলগুলোর নেতারা।
জামায়াতে ইসলামী : জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেছেন, নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় মহান আল্লাহ তায়ালার ৯৯ নাম, রাসূল (স:), আরবী ভাষা ও মুসলিম নারীদের হিজাব পরা এবং হযরত আবু বকর (রা:) ও হযরত আবু হোরায়রা (রা:)-এর নাম সম্পর্কে গাফফার চৌধুরী যে মনগড়া বিকৃত বক্তব্য প্রদান করেছেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি এ মনগড়া বিকৃত বক্তব্য দিয়ে বিশ্বের ১৫০ কোটি মুসলমানের ঈমান-আক্বিদা এবং ইসলামের ওপর আঘাত দিয়ে মারাত্মক অপরাধ করেছেন। তার এ বক্তব্যে সারা বিশ্বের মুসলমান বিক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। তিনি আরো বলেন, এ গর্হিত বক্তব্য প্রদান করে তিনি নিজেকে ইসলাম বিরোধী ব্যক্তি হিসেবে প্রমাণ করেছেন। আল্লাহ, রাসূল (স:), আরবী ভাষা ও মুসলিম নারীদের হিজাব পরা সম্পর্কে বিকৃত, বানোয়াট ও গর্হিত বক্তব্য প্রদান করার কোন এখতিয়ার তার নেই। এ বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে ইসলাম সম্পর্কে তার চরম অজ্ঞতাই প্রকাশিত হয়েছে। তিনি দাঁড়িওয়ালা ও টুপি পরিহিত সৎ এবং ধার্মিক লোকদের সম্পর্কে ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য দিয়ে তাদের চরিত্র হননের অপচেষ্টা চালিয়েছেন। কোন মুসলমানের পক্ষে এ ধরনের অন্যায় ও অযৌক্তিক বক্তব্য প্রদান করা সম্ভব নয়। তার বক্তব্য দেখে জনগণের মনে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে তিনি আদৌ মুসলমান কিনা? তার এ অন্যায় বক্তব্যের প্রতিবাদ জানানো মুসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব। ইসলাম বিরোধী বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করে আল্লাহর কাছে তাওবা করার এবং বিশ্বের মুসলমানদের নিকট নিঃশর্তভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য তিনি আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর প্রতি আহ্বান জানান।
হেফাজতে ইসলাম : হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী গতকাল এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, ৩ জুলাই নিউইয়র্ক বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের এক অনুষ্ঠানে প্রবাসী বিতর্কিত লেখক ও তথাকথিত বুদ্ধিজীবি আবদুল গাফফার চৌধুরী আল্লাহর গুণবাচক ৯৯ নাম ও কয়েকজন সম্মানিত সাহাবীকে নিয়ে যে তামাশা ও জঘন্য উক্তি করেছেন তার ফলে তিনি ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে মুরতাদ হয়ে গেছেন। তওবা করে পুনরায় ইসলাম গ্রহণ করা ছাড়া তিনি মুসলমান পরিচয় বহন করতে পারবেন না। নেতৃদ্বয় সরকারের উদ্দেশে বলেন, সরাসরি আল্লাহর নাম নিয়ে জঘন্য উক্তি, সাহাবায়ে কেরামের প্রতি বিভ্রান্তিকর ও অপমানসূচক মন্তব্যকারী মুরতাদ গাফফার চৌধুরীর নাগরিকত্ব বাতিল করা হোক। তাকে যেন কোনোভাবেই বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না দেয়া হয়। কারণ মহান আল্লাহ, বিশ্বনবী মুহাম্মদ সা., সাহাবাদের নিয়ে জঘন্য উক্তি করে তিনি ধৃষ্টতার সব সীমা ইতোমধ্যে অতিক্রম করেছেন। বাংলাদেশের ১৬ কোটি নবীপ্রেমিক মুসলিম জনতা ধর্মত্যাগী এ মুরতাদের ফাঁসি চায়। জনদাবি উপেক্ষা করে তাকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেয়া হলে ব্যাপক গণপ্রতিরোধ শুরু হবে। তারা বলেন, আবদুল গাফফার চৌধুরীর বক্তব্যে দেয়া তথ্য ও মন্তব্যগুলো সম্পূর্ণ ঈমান পরিপন্থী, অসত্য ও চরম বিভ্রান্তিকর। আরবি ভাষা ও ইসলামের ধর্মতত্ত্ব বিষয়ে ‘পাণ্ডিত্য’ জাহির করতে গিয়ে তিনি একদিকে তার মুর্খতা ও অন্যদিকে আল্লাহদ্রোহিতাই প্রকাশ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আল্লাহর ৯৯ নাম সবই কিন্তু কাফেরদের দেবতার নাম...সবই কিন্তু ইসলাম এডাপ্ট করেছে।’ এটা নির্জলা মিথ্যা ও সর্বৈব অবাস্তব তথ্য। এরূপ মন্তব্য শিরক ও আল্লাহর অবমাননার শামিল। এমন উক্তির পরে কেউ মুসলমান থাকতে পারে না। তিনি মেয়েদের হিজাব ও মাসিক রজস্রাব ইত্যাদির বিধান সম্পর্কেও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। দ্বিতীয় শ্রেণীর মেয়েদের নাকি হায়েয-নেফাসের মাসআলা শেখানো হয়। এটা আরেকটি মিথ্যাচার। বাংলাদেশ কেন পৃথিবীর কোথাও কোনো মুসলিম দেশে দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেণীর কোমলমতি শিশুদের এ বয়সে বয়ঃপ্রাপ্তিকালীন শারিরিক পরিবর্তন ও বিশেষ অবস্থায় পবিত্রতা, নামায-ইত্যাদির বিষয় পড়ানো হয় না। গাফফার চৌধুরী ও তার সমগোত্রীয়রা বরং স্কুল-মাদরাসার শিশুদের শারিরিক ও যৌনশিক্ষার নামে সমাজে নৈতিক বিপর্যয় ডেকে আনছেন। আলেম-ওলামা ও ইসলামপন্থী সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ এসব হীন পদক্ষেপের যৌক্তিক প্রতিবাদ করে আসছেন। হেফাজত নেতারা বলেন, হযরত আবু বকর সিদ্দিক রা. ও হযরত আবু হুরায়রা রা. এর নাম নিয়েও গাফফার চৌধুরীর ধৃষ্টতা অমার্জনীয়। তার মুর্খতার জবাবে বলতে চাই, আবু বকরের যে অর্থ তিনি বলেছেন এটা সম্পূর্ণ ভুল ও বিভ্রান্তির এবং আবু হুরায়রা রা. এর নামের অর্থও বাস্তবে তেমনটি নয় যা তিনি দাবি করেছেন। উপরন্তু আবু হুরায়রা রা. এর আসল নামও নয় এটি। তাছাড়া আবু হুরায়রা উপাধি জাহিলী যুগের নয় বরং প্রিয়নবীজির দেয়া প্রীতিসূচক উপাধি। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে নেতারা বলেন, গাফফার চৌধুরী ও লতিফ সিদ্দিকীদের মতো বিষধর সাপগুলোকে সময় থাকতে যদি শায়েস্তা করা না হয় তাহলে বর্তমান সরকারের অপমৃত্যুর জন্য কোনো বিরোধীদল ও রাজনৈতিক আন্দোলনের দরকার হবে না। নিজেদের কল্যাণ ও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অবিলম্বে লতিফ সিদ্দিকী ও তার নব্যদোসর গাফফার চৌধুরীকে গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় সারাদেশে সর্বস্তরের আল্লাহ ও রাসুলপ্রেমিক লাখো জনতা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।
হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর : বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সদস্য সচিব মাওলানা জুনায়েদ আলহাবীব এক বিবৃতিতে বলেছেন, তথাকথিত জ্ঞানপাপী আবদুল গাফফার চৌধুরী মহান আল্লাহ, রাসূল (স.), সাহাবায়ে কিরাম ও হিজাব নিয়ে যে বিষোদগার ও কটূক্তি করেছে, তাতে আমরা অত্যান্ত ব্যাথীত ও মর্মাহত। তার এহেন মন্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিদ্বেষপূর্ণ এবং ইসলাম সম্পর্কে তার অজ্ঞতারই পরিচয়। পবিত্র এই রমযান মাসে ইসলাম ও শরীয়তের বিধিবিধান সম্পর্কে এজাতীয় অবমাননাকর বক্তব্য কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। অতিস্বত্তর তাকে তার এহেন মিথ্যা ও উস্কানিমূলক মন্তব্যের জন্য জাতির কাছে প্রকাশ্য ক্ষমা চাইতে হবে এবং মহান আল্লাহর দরবারে তওবা করে কালিমাকে নবায়ন করতে হবে। অন্যথায় তাকেও স্বঘোষিত মুরতাদদের পরিণতি ভোগ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, মহান আল্লাহর যাবতীয় নাম ও গুনাবলীর ওপর ভক্তি-বিশ্বাস রাখা প্রতিটি মুসলমানের জন্য ফরয। আল্লাহ পাকের নাম নিয়ে কেউ তুচ্ছ-তাচ্ছিল্ল ও কটূক্তি করলে মুরতাদ হয়ে যায়। আবদুল গাফফার সাহেব ওই সমাবেশে বলেছেন, ‘আল্লাহর ৯৯ নাম, সবই; কিন্তু কাফেরদের দেবতাদের নাম।’ পাশাপাশি ইসলামের ফরয বিধান বোরকা-হিজাব সসম্পর্কে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘এখন যুগ পাল্টেছে। এখন বাংলাদেশে বোরকা পরার বিপক্ষে অনেকেই জেগে উঠেছে। এসব ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’ এমনকি রাসূল (স.) সম্পর্কেও কটূক্তি করতে কুন্ঠা বোধ করেন নি। স্বঘোষিত মুরতাদ লতিফের মত এহেন জঘন্য কটাক্ষ্য ও বিদ্বেষপূর্ণ কক্তব্যের ওপর অটল থাকলে নবীপ্রেমিক তৌহিদি জনতা তাকে ছাড় বিন চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেবে না। আমরা পরিস্কার বলতে চাই, বাংলার ইতিহাসে কোন নাস্তিক-মুরতাদ ইসলামের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে পার পাই নাই। তেমনিভাবে আবদুল গাফফার গংরাও পার পাবে না।
শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম : শীর্ষ উলামায়ে কেরাম ও বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, স্ব-ঘোষিত ধর্মদ্রোহী মুরতাদ আ. লতিফ সিদ্দিকীকে উপযুক্ত শাস্তি দেয়ার পরিবর্তে জামিনে মুক্তি দেয়ায় নতুন নতুন মুরতাদ তৈরী হচ্ছে। মহাজোট সরকার কি নাস্তিক মুরতাদদের দৌরাত্ম থামিয়ে দেবে না তাদেরকে আস্কারা দিবে? শীর্ষ উলামায়ে কেরাম তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা প্রকাশ করে বলেন, ৩ জুলাই নিউইয়ার্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের এক আলোচনা সভায় বির্তকিত লেখক আ. গফফার চৌধুরী মহান আল্লাহ তায়ালার ৯৯টি নামকে কাফেরদের দেবতার নাম, ইসলামের ফরজ বিধান নারীর পর্দা ও সাহাবায়ে কেরামের নাম নিয়ে উপহাস করে কান্ডজ্ঞানহীন জ্ঞানপাপী সুলভ যে বক্তব্য দিয়েছে দুনিয়ার ইতিহাসে কোন কাফের বেঈমান ও ইসলাম বিদ্বেষীরাও এহেন নেক্কারজনক বক্তব্য দিতে দু:সাহস দেখাইনি। ইতিপূর্বে স্ব-ঘোষিত ধর্মদ্রোহীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হলে নিত্য নতুন মুরতাদ সাজার খায়েশ বন্ধ হতো। শীর্ষ উলামায়ে কেরাম গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন- কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে স্ব-ঘোষিত ধর্মদ্রোহী মুরতাদ আ. লতিফকে সংসদে যোগদানের আয়োজন চলছে। আমরা সরকারকে হুশিয়ার করে বলতে চাই- আ. লতিফকে যদি সংসদে যোগদানের সুযোগ দেয়া হয় তাহলে লাগাতার হরতাল সহ কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হব। আমরা সরকারের কাছে জোর দাবী জানাতে চাই সংসদের চলতি অধিবেশনেই মুরতাদদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান প্রনয়ণ করুন। মুরতাদ লতিফ, গফফারদের উক্ত আইনেই বিচারের আয়োজন করুন। অন্যথায় দেশ মহাসংকটে পড়তে পারে যার দায়-দায়িত্ব সরকারকে বহন করতে হবে। বিবৃতি দাতাদের মধ্যে অন্যতম হলেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি শাইখ আবদুল মোমিন, শীর্ষআলেমেদ্বীন রাবেতা আলম আল-ইসলামীর স্থায়ী সদস্য ও সম্মিলিত উলামা মাশায়েখ পরিষদের সভাপতি মাওলানা মুহিউদ্দীন খান, হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা আহমদ শফী, হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা মুহিবুল্লাহ বাবু নগরী, আল্লামা সুলতান যওফ নদভী, আল্লামা আব্দুল হালিম বোখারী, আল্লামা আবদুল হালিম, আল্লামা তাজুল ইসলাম, শায়খুল হাদীস আল্লামা শামসুল আলম, খেলাফত আন্দোলনের প্রধান আমীরে শরীয়ত হাফেজ মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হজুর, মাওঃ মোহাম্মাদ ইসহাক, মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী, অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন, মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, মাওলানা মহিউদ্দীন রব্বানী, ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী প্রমুখ।
খেলাফত মজলিস : সংগঠনের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর দেয়া বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। গতকাল এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী তার বক্তব্যের মাধ্যমে আল্লাহর সিফতের অবমাননা করে সারা বিশ্বের মুসলমানের মনে আঘাত দিয়েছেন। এ বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি কুপমন্ডুতার পরিচয় দিয়েছেন। এ জন্যে তাকে অনতিবিলম্বে তওবা করে মুসলমানদের কাছে মাফ চাইতে হবে, তার দেয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে তার পরিনতি অভিশপ্ত নাস্তিক- মুরতাদদের মতই হবে। বাংলাদেশের তাওহিদী জনতা তাকে কখনো এ দেশের মাটিতে পা ফেলতে দিবে না। বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় আরো বলেন, এ রকম নাস্তিক্যবাদী বক্তব্য প্রদানের পরও জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন তাকে সম্মাননা দিয়ে প্রমান করেছে, তারা এহেন নাস্তিক্যবাদী বক্তব্যের জন্যেই তাকে পুরস্কৃত করেছে। এবং এর দায় বাংলাদেশ সরকারও এড়াতে পারে না। বাংলাদেশ সরকারকে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ও জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : সংগঠনের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, যুগে যুগে যখনই ইসলাম, নবী সা. ও মুসলমানের বিরুদ্ধে আঘাত এসেছে স্বঘোষিত মুরতাদ আব্দুল লতিফ আমাদের প্রিয় নবী সা. ও পবিত্র হজ্ব নিয়ে অশালীন মন্তব্য করে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে। তাকে কোনভাবেই বাচানোর চেষ্টা করলে সরকারেরও আখের রক্ষা হবে না। তিনি বলেন, বামপন্থি লেখক আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তবের কারণে গাফ্ফার মুরতাদ হয়ে গেছে। তাকেও দেশে ফিরিয়ে এনে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। সরকার ইসলাম, আল্লাহ, রাসূল সা.-এর বিরুদ্ধে সিন্ডিকেটভিত্তিক অপপ্রচার চালাচ্ছে। পীর সাহেব চরমোনাই আরও বলেন, ধর্মদ্রোহী ও মুরতাদদের শাস্তির আইন থাকলে নতুন নতুন নাস্তিক-মুরতাদদের আবির্ভাব হতো না। আজ বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইট থেকে ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে স্বঘোষিত মুরতাদ লতিফ, বামপন্থি লেখক আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। নগর সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, নগর সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, ছাত্রনেতা নুরুল ইসলাম আলআমীন, অধ্যাপক ফজলুল হক মৃধা, মু. মোশাররফ হোসেন, মু. শরীফুল ইসলাম, মাওলানা বাছির উদ্দিন মাহমুদ প্রমুখ। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম : জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম সভাপতি শায়েখ আব্দুল মোমিন, সিনিয়র সহসভাপতি আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী ও মহাসচিব মুফতী মুহাম্মদ ওয়াক্কাস আব্দুল গাফফার চৌধুরীর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং ইসলাম বিদ্বেষী অপশক্তির ইন্ধনে তারা দেশে একটা চরম বিশৃংখলা সৃষ্টির পায়তারা চালাচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী এবং রাষ্ট্রীয় আনুকুল্যধন্য ব্যক্তিবর্গের একমাত্র কাজই হয়ে দাড়িয়েছে ইসলামের বিরুদ্ধাচারণ করা। কিন্তুু ইতোপূর্বে তারা যে দুঃসাহস করেনি, নিউইয়র্কে আল্লাহর নাম এবং রাসূল শব্দের অপব্যাখ্যায় জঘন্য মন্তব্যের মাধ্যমে আব্দুল গাফফার চৌধুরী তাদের সকলকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। জমিয়ত নেতৃবৃন্দ বলেন, ইতোপূর্বে নাস্তিক ব্লগার ও লতিফ সিদ্দীকির জামিন এবং স্বাধীনভাবে বিচরণের সুযোগ দিয়ে সরকার এসব কুলাংগারদের সাহস বাড়িয়ে দেয়ার পর এবার গাফফার চৌধুরীকে সরাসরি মাঠে নামিয়ে দিয়েছে। কারণ নিউইয়র্কে এতো জঘন্য বক্তব্যের পর জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি আব্দুল মোমিন কর্তৃক তাকে আজীবন সম্মাননা স্মারক প্রদানে তাকে আরো উৎসাহিত করা হয়েছে। জমিয়ত নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে গাফফার চৌধুরীর নাগরিকত্ব বাতিল, তার বাংলাদেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ধর্ম অবমাননাকারীদেও জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে আইন প্রণয়নে সরকারের প্রতি জোর দাবী জানিয়ে বলেন, সরকার ইসলামপ্রেমী তৌহিদি জনতার ঈমান পরীক্ষা করতে চাইলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে পারে। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস : সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক বলেছেন, ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে ক্ষমতায় বসে আওয়ামী সরকার নাস্তিক-মুরতাদদের মদদ দিয়ে যাচ্ছে। স্বঘোষিত মুরতাদ আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে মুক্তি দিয়ে রমজানের পবিত্রতা নষ্ট করেছে। তিনি সরকারকে হুশিয়ার করে বলেন, অনতিবিলম্বে আল্লাহ-রাসূল সা: এর দুশমন আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও আব্দুল গাফফার চৌধুরীকে গ্রেফতার করে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। অন্যথায় মুসলমানদের হৃদয়ে যে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন তার লেলিহান শিখায় আপনার ক্ষমতার মসনদ জ্বলে-পুড়ে নিশে:ষ হয়ে যাবে। গতকাল পুরানা পল্টনস্থ মজলিস মিলনায়তনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজিত ‘বদর দিবসের তাৎপর্য ও শিক্ষা শীর্ষক’ আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। ঢাকা মহানগরী সভাপতি মাওলানা এনামুল হক নূরের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমীন ইউসুফের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, কেন্দ্রীয় অফিস ও প্রচার সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল প্রমুখ। - See more at: http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/36155#sthash.luGpQ5Eo.dpuf
নাগরিকত্ব বাতিলের দাবি
গাফফার চৌধুরীর বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ ইসলামী দলগুলোর
০৫ জুলাই ২০১৫,রবিবার, ২০:১৪
কলামিস্ট আব্দুল গফফার চৌধুরী আল্লাহর ৯৯ নামসহ ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ইসলামী সংগঠনগুলো। তারা বলেছেন, গাফফার চৌধুরী ইসলাম থেকে খারিজ ও মুরতাদ হয়ে গেছেন। তওবা করে পুনরায় ইসলাম গ্রহণ করা ছাড়া তিনি মুসলমান পরিচয় বহন করতে পারবেন না। তাকে গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। তার নাগরিকত্ব বাতিল ও দেশে প্রবেশ করতে না দেয়ার আহবান জানিয়েছেন ইসলামী দলগুলোর নেতারা।
জামায়াতে ইসলামী : জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেছেন, নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় মহান আল্লাহ তায়ালার ৯৯ নাম, রাসূল (স:), আরবী ভাষা ও মুসলিম নারীদের হিজাব পরা এবং হযরত আবু বকর (রা:) ও হযরত আবু হোরায়রা (রা:)-এর নাম সম্পর্কে গাফফার চৌধুরী যে মনগড়া বিকৃত বক্তব্য প্রদান করেছেন তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি এ মনগড়া বিকৃত বক্তব্য দিয়ে বিশ্বের ১৫০ কোটি মুসলমানের ঈমান-আক্বিদা এবং ইসলামের ওপর আঘাত দিয়ে মারাত্মক অপরাধ করেছেন। তার এ বক্তব্যে সারা বিশ্বের মুসলমান বিক্ষুব্ধ ও মর্মাহত। তিনি আরো বলেন, এ গর্হিত বক্তব্য প্রদান করে তিনি নিজেকে ইসলাম বিরোধী ব্যক্তি হিসেবে প্রমাণ করেছেন। আল্লাহ, রাসূল (স:), আরবী ভাষা ও মুসলিম নারীদের হিজাব পরা সম্পর্কে বিকৃত, বানোয়াট ও গর্হিত বক্তব্য প্রদান করার কোন এখতিয়ার তার নেই। এ বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে ইসলাম সম্পর্কে তার চরম অজ্ঞতাই প্রকাশিত হয়েছে। তিনি দাঁড়িওয়ালা ও টুপি পরিহিত সৎ এবং ধার্মিক লোকদের সম্পর্কে ভিত্তিহীন, মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্য দিয়ে তাদের চরিত্র হননের অপচেষ্টা চালিয়েছেন। কোন মুসলমানের পক্ষে এ ধরনের অন্যায় ও অযৌক্তিক বক্তব্য প্রদান করা সম্ভব নয়। তার বক্তব্য দেখে জনগণের মনে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে তিনি আদৌ মুসলমান কিনা? তার এ অন্যায় বক্তব্যের প্রতিবাদ জানানো মুসলমানদের ঈমানী দায়িত্ব। ইসলাম বিরোধী বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করে আল্লাহর কাছে তাওবা করার এবং বিশ্বের মুসলমানদের নিকট নিঃশর্তভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য তিনি আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর প্রতি আহ্বান জানান।
হেফাজতে ইসলাম : হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী গতকাল এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, ৩ জুলাই নিউইয়র্ক বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের এক অনুষ্ঠানে প্রবাসী বিতর্কিত লেখক ও তথাকথিত বুদ্ধিজীবি আবদুল গাফফার চৌধুরী আল্লাহর গুণবাচক ৯৯ নাম ও কয়েকজন সম্মানিত সাহাবীকে নিয়ে যে তামাশা ও জঘন্য উক্তি করেছেন তার ফলে তিনি ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে মুরতাদ হয়ে গেছেন। তওবা করে পুনরায় ইসলাম গ্রহণ করা ছাড়া তিনি মুসলমান পরিচয় বহন করতে পারবেন না। নেতৃদ্বয় সরকারের উদ্দেশে বলেন, সরাসরি আল্লাহর নাম নিয়ে জঘন্য উক্তি, সাহাবায়ে কেরামের প্রতি বিভ্রান্তিকর ও অপমানসূচক মন্তব্যকারী মুরতাদ গাফফার চৌধুরীর নাগরিকত্ব বাতিল করা হোক। তাকে যেন কোনোভাবেই বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না দেয়া হয়। কারণ মহান আল্লাহ, বিশ্বনবী মুহাম্মদ সা., সাহাবাদের নিয়ে জঘন্য উক্তি করে তিনি ধৃষ্টতার সব সীমা ইতোমধ্যে অতিক্রম করেছেন। বাংলাদেশের ১৬ কোটি নবীপ্রেমিক মুসলিম জনতা ধর্মত্যাগী এ মুরতাদের ফাঁসি চায়। জনদাবি উপেক্ষা করে তাকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে দেয়া হলে ব্যাপক গণপ্রতিরোধ শুরু হবে। তারা বলেন, আবদুল গাফফার চৌধুরীর বক্তব্যে দেয়া তথ্য ও মন্তব্যগুলো সম্পূর্ণ ঈমান পরিপন্থী, অসত্য ও চরম বিভ্রান্তিকর। আরবি ভাষা ও ইসলামের ধর্মতত্ত্ব বিষয়ে ‘পাণ্ডিত্য’ জাহির করতে গিয়ে তিনি একদিকে তার মুর্খতা ও অন্যদিকে আল্লাহদ্রোহিতাই প্রকাশ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আল্লাহর ৯৯ নাম সবই কিন্তু কাফেরদের দেবতার নাম...সবই কিন্তু ইসলাম এডাপ্ট করেছে।’ এটা নির্জলা মিথ্যা ও সর্বৈব অবাস্তব তথ্য। এরূপ মন্তব্য শিরক ও আল্লাহর অবমাননার শামিল। এমন উক্তির পরে কেউ মুসলমান থাকতে পারে না। তিনি মেয়েদের হিজাব ও মাসিক রজস্রাব ইত্যাদির বিধান সম্পর্কেও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। দ্বিতীয় শ্রেণীর মেয়েদের নাকি হায়েয-নেফাসের মাসআলা শেখানো হয়। এটা আরেকটি মিথ্যাচার। বাংলাদেশ কেন পৃথিবীর কোথাও কোনো মুসলিম দেশে দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেণীর কোমলমতি শিশুদের এ বয়সে বয়ঃপ্রাপ্তিকালীন শারিরিক পরিবর্তন ও বিশেষ অবস্থায় পবিত্রতা, নামায-ইত্যাদির বিষয় পড়ানো হয় না। গাফফার চৌধুরী ও তার সমগোত্রীয়রা বরং স্কুল-মাদরাসার শিশুদের শারিরিক ও যৌনশিক্ষার নামে সমাজে নৈতিক বিপর্যয় ডেকে আনছেন। আলেম-ওলামা ও ইসলামপন্থী সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণ এসব হীন পদক্ষেপের যৌক্তিক প্রতিবাদ করে আসছেন। হেফাজত নেতারা বলেন, হযরত আবু বকর সিদ্দিক রা. ও হযরত আবু হুরায়রা রা. এর নাম নিয়েও গাফফার চৌধুরীর ধৃষ্টতা অমার্জনীয়। তার মুর্খতার জবাবে বলতে চাই, আবু বকরের যে অর্থ তিনি বলেছেন এটা সম্পূর্ণ ভুল ও বিভ্রান্তির এবং আবু হুরায়রা রা. এর নামের অর্থও বাস্তবে তেমনটি নয় যা তিনি দাবি করেছেন। উপরন্তু আবু হুরায়রা রা. এর আসল নামও নয় এটি। তাছাড়া আবু হুরায়রা উপাধি জাহিলী যুগের নয় বরং প্রিয়নবীজির দেয়া প্রীতিসূচক উপাধি। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে নেতারা বলেন, গাফফার চৌধুরী ও লতিফ সিদ্দিকীদের মতো বিষধর সাপগুলোকে সময় থাকতে যদি শায়েস্তা করা না হয় তাহলে বর্তমান সরকারের অপমৃত্যুর জন্য কোনো বিরোধীদল ও রাজনৈতিক আন্দোলনের দরকার হবে না। নিজেদের কল্যাণ ও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অবিলম্বে লতিফ সিদ্দিকী ও তার নব্যদোসর গাফফার চৌধুরীকে গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় সারাদেশে সর্বস্তরের আল্লাহ ও রাসুলপ্রেমিক লাখো জনতা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।
হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর : বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সদস্য সচিব মাওলানা জুনায়েদ আলহাবীব এক বিবৃতিতে বলেছেন, তথাকথিত জ্ঞানপাপী আবদুল গাফফার চৌধুরী মহান আল্লাহ, রাসূল (স.), সাহাবায়ে কিরাম ও হিজাব নিয়ে যে বিষোদগার ও কটূক্তি করেছে, তাতে আমরা অত্যান্ত ব্যাথীত ও মর্মাহত। তার এহেন মন্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিদ্বেষপূর্ণ এবং ইসলাম সম্পর্কে তার অজ্ঞতারই পরিচয়। পবিত্র এই রমযান মাসে ইসলাম ও শরীয়তের বিধিবিধান সম্পর্কে এজাতীয় অবমাননাকর বক্তব্য কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। অতিস্বত্তর তাকে তার এহেন মিথ্যা ও উস্কানিমূলক মন্তব্যের জন্য জাতির কাছে প্রকাশ্য ক্ষমা চাইতে হবে এবং মহান আল্লাহর দরবারে তওবা করে কালিমাকে নবায়ন করতে হবে। অন্যথায় তাকেও স্বঘোষিত মুরতাদদের পরিণতি ভোগ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, মহান আল্লাহর যাবতীয় নাম ও গুনাবলীর ওপর ভক্তি-বিশ্বাস রাখা প্রতিটি মুসলমানের জন্য ফরয। আল্লাহ পাকের নাম নিয়ে কেউ তুচ্ছ-তাচ্ছিল্ল ও কটূক্তি করলে মুরতাদ হয়ে যায়। আবদুল গাফফার সাহেব ওই সমাবেশে বলেছেন, ‘আল্লাহর ৯৯ নাম, সবই; কিন্তু কাফেরদের দেবতাদের নাম।’ পাশাপাশি ইসলামের ফরয বিধান বোরকা-হিজাব সসম্পর্কে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘এখন যুগ পাল্টেছে। এখন বাংলাদেশে বোরকা পরার বিপক্ষে অনেকেই জেগে উঠেছে। এসব ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’ এমনকি রাসূল (স.) সম্পর্কেও কটূক্তি করতে কুন্ঠা বোধ করেন নি। স্বঘোষিত মুরতাদ লতিফের মত এহেন জঘন্য কটাক্ষ্য ও বিদ্বেষপূর্ণ কক্তব্যের ওপর অটল থাকলে নবীপ্রেমিক তৌহিদি জনতা তাকে ছাড় বিন চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেবে না। আমরা পরিস্কার বলতে চাই, বাংলার ইতিহাসে কোন নাস্তিক-মুরতাদ ইসলামের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে পার পাই নাই। তেমনিভাবে আবদুল গাফফার গংরাও পার পাবে না।
শীর্ষ ওলামায়ে কেরাম : শীর্ষ উলামায়ে কেরাম ও বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, স্ব-ঘোষিত ধর্মদ্রোহী মুরতাদ আ. লতিফ সিদ্দিকীকে উপযুক্ত শাস্তি দেয়ার পরিবর্তে জামিনে মুক্তি দেয়ায় নতুন নতুন মুরতাদ তৈরী হচ্ছে। মহাজোট সরকার কি নাস্তিক মুরতাদদের দৌরাত্ম থামিয়ে দেবে না তাদেরকে আস্কারা দিবে? শীর্ষ উলামায়ে কেরাম তীব্র নিন্দা ও ঘৃণা প্রকাশ করে বলেন, ৩ জুলাই নিউইয়ার্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের এক আলোচনা সভায় বির্তকিত লেখক আ. গফফার চৌধুরী মহান আল্লাহ তায়ালার ৯৯টি নামকে কাফেরদের দেবতার নাম, ইসলামের ফরজ বিধান নারীর পর্দা ও সাহাবায়ে কেরামের নাম নিয়ে উপহাস করে কান্ডজ্ঞানহীন জ্ঞানপাপী সুলভ যে বক্তব্য দিয়েছে দুনিয়ার ইতিহাসে কোন কাফের বেঈমান ও ইসলাম বিদ্বেষীরাও এহেন নেক্কারজনক বক্তব্য দিতে দু:সাহস দেখাইনি। ইতিপূর্বে স্ব-ঘোষিত ধর্মদ্রোহীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হলে নিত্য নতুন মুরতাদ সাজার খায়েশ বন্ধ হতো। শীর্ষ উলামায়ে কেরাম গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন- কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে স্ব-ঘোষিত ধর্মদ্রোহী মুরতাদ আ. লতিফকে সংসদে যোগদানের আয়োজন চলছে। আমরা সরকারকে হুশিয়ার করে বলতে চাই- আ. লতিফকে যদি সংসদে যোগদানের সুযোগ দেয়া হয় তাহলে লাগাতার হরতাল সহ কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হব। আমরা সরকারের কাছে জোর দাবী জানাতে চাই সংসদের চলতি অধিবেশনেই মুরতাদদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান প্রনয়ণ করুন। মুরতাদ লতিফ, গফফারদের উক্ত আইনেই বিচারের আয়োজন করুন। অন্যথায় দেশ মহাসংকটে পড়তে পারে যার দায়-দায়িত্ব সরকারকে বহন করতে হবে। বিবৃতি দাতাদের মধ্যে অন্যতম হলেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি শাইখ আবদুল মোমিন, শীর্ষআলেমেদ্বীন রাবেতা আলম আল-ইসলামীর স্থায়ী সদস্য ও সম্মিলিত উলামা মাশায়েখ পরিষদের সভাপতি মাওলানা মুহিউদ্দীন খান, হেফাজতে ইসলামের আমীর আল্লামা আহমদ শফী, হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা মুহিবুল্লাহ বাবু নগরী, আল্লামা সুলতান যওফ নদভী, আল্লামা আব্দুল হালিম বোখারী, আল্লামা আবদুল হালিম, আল্লামা তাজুল ইসলাম, শায়খুল হাদীস আল্লামা শামসুল আলম, খেলাফত আন্দোলনের প্রধান আমীরে শরীয়ত হাফেজ মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হজুর, মাওঃ মোহাম্মাদ ইসহাক, মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী, অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন, মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, মাওলানা মহিউদ্দীন রব্বানী, ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী প্রমুখ।
খেলাফত মজলিস : সংগঠনের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর দেয়া বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। গতকাল এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী তার বক্তব্যের মাধ্যমে আল্লাহর সিফতের অবমাননা করে সারা বিশ্বের মুসলমানের মনে আঘাত দিয়েছেন। এ বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি কুপমন্ডুতার পরিচয় দিয়েছেন। এ জন্যে তাকে অনতিবিলম্বে তওবা করে মুসলমানদের কাছে মাফ চাইতে হবে, তার দেয়া বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে তার পরিনতি অভিশপ্ত নাস্তিক- মুরতাদদের মতই হবে। বাংলাদেশের তাওহিদী জনতা তাকে কখনো এ দেশের মাটিতে পা ফেলতে দিবে না। বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় আরো বলেন, এ রকম নাস্তিক্যবাদী বক্তব্য প্রদানের পরও জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন তাকে সম্মাননা দিয়ে প্রমান করেছে, তারা এহেন নাস্তিক্যবাদী বক্তব্যের জন্যেই তাকে পুরস্কৃত করেছে। এবং এর দায় বাংলাদেশ সরকারও এড়াতে পারে না। বাংলাদেশ সরকারকে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ও জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : সংগঠনের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, যুগে যুগে যখনই ইসলাম, নবী সা. ও মুসলমানের বিরুদ্ধে আঘাত এসেছে স্বঘোষিত মুরতাদ আব্দুল লতিফ আমাদের প্রিয় নবী সা. ও পবিত্র হজ্ব নিয়ে অশালীন মন্তব্য করে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে। তাকে কোনভাবেই বাচানোর চেষ্টা করলে সরকারেরও আখের রক্ষা হবে না। তিনি বলেন, বামপন্থি লেখক আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর ধৃষ্টতাপূর্ণ বক্তবের কারণে গাফ্ফার মুরতাদ হয়ে গেছে। তাকেও দেশে ফিরিয়ে এনে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। সরকার ইসলাম, আল্লাহ, রাসূল সা.-এর বিরুদ্ধে সিন্ডিকেটভিত্তিক অপপ্রচার চালাচ্ছে। পীর সাহেব চরমোনাই আরও বলেন, ধর্মদ্রোহী ও মুরতাদদের শাস্তির আইন থাকলে নতুন নতুন নাস্তিক-মুরতাদদের আবির্ভাব হতো না। আজ বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইট থেকে ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে স্বঘোষিত মুরতাদ লতিফ, বামপন্থি লেখক আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। নগর সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারী মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, নগর সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আলতাফ হোসেন, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, ছাত্রনেতা নুরুল ইসলাম আলআমীন, অধ্যাপক ফজলুল হক মৃধা, মু. মোশাররফ হোসেন, মু. শরীফুল ইসলাম, মাওলানা বাছির উদ্দিন মাহমুদ প্রমুখ। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম : জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম সভাপতি শায়েখ আব্দুল মোমিন, সিনিয়র সহসভাপতি আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী ও মহাসচিব মুফতী মুহাম্মদ ওয়াক্কাস আব্দুল গাফফার চৌধুরীর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং ইসলাম বিদ্বেষী অপশক্তির ইন্ধনে তারা দেশে একটা চরম বিশৃংখলা সৃষ্টির পায়তারা চালাচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী এবং রাষ্ট্রীয় আনুকুল্যধন্য ব্যক্তিবর্গের একমাত্র কাজই হয়ে দাড়িয়েছে ইসলামের বিরুদ্ধাচারণ করা। কিন্তুু ইতোপূর্বে তারা যে দুঃসাহস করেনি, নিউইয়র্কে আল্লাহর নাম এবং রাসূল শব্দের অপব্যাখ্যায় জঘন্য মন্তব্যের মাধ্যমে আব্দুল গাফফার চৌধুরী তাদের সকলকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। জমিয়ত নেতৃবৃন্দ বলেন, ইতোপূর্বে নাস্তিক ব্লগার ও লতিফ সিদ্দীকির জামিন এবং স্বাধীনভাবে বিচরণের সুযোগ দিয়ে সরকার এসব কুলাংগারদের সাহস বাড়িয়ে দেয়ার পর এবার গাফফার চৌধুরীকে সরাসরি মাঠে নামিয়ে দিয়েছে। কারণ নিউইয়র্কে এতো জঘন্য বক্তব্যের পর জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি আব্দুল মোমিন কর্তৃক তাকে আজীবন সম্মাননা স্মারক প্রদানে তাকে আরো উৎসাহিত করা হয়েছে। জমিয়ত নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে গাফফার চৌধুরীর নাগরিকত্ব বাতিল, তার বাংলাদেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ধর্ম অবমাননাকারীদেও জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে আইন প্রণয়নে সরকারের প্রতি জোর দাবী জানিয়ে বলেন, সরকার ইসলামপ্রেমী তৌহিদি জনতার ঈমান পরীক্ষা করতে চাইলে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে পারে। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস : সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক বলেছেন, ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে ক্ষমতায় বসে আওয়ামী সরকার নাস্তিক-মুরতাদদের মদদ দিয়ে যাচ্ছে। স্বঘোষিত মুরতাদ আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে মুক্তি দিয়ে রমজানের পবিত্রতা নষ্ট করেছে। তিনি সরকারকে হুশিয়ার করে বলেন, অনতিবিলম্বে আল্লাহ-রাসূল সা: এর দুশমন আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও আব্দুল গাফফার চৌধুরীকে গ্রেফতার করে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। অন্যথায় মুসলমানদের হৃদয়ে যে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন তার লেলিহান শিখায় আপনার ক্ষমতার মসনদ জ্বলে-পুড়ে নিশে:ষ হয়ে যাবে। গতকাল পুরানা পল্টনস্থ মজলিস মিলনায়তনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজিত ‘বদর দিবসের তাৎপর্য ও শিক্ষা শীর্ষক’ আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। ঢাকা মহানগরী সভাপতি মাওলানা এনামুল হক নূরের সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমীন ইউসুফের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, কেন্দ্রীয় অফিস ও প্রচার সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল প্রমুখ। - See more at: http://www.dailynayadiganta.com/detail/news/36155#sthash.luGpQ5Eo.dpuf
No comments:
Post a Comment