Source LINK
২। আলী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ মাহ্দী আমাদের আহলে বাইত থেকে হবে। আল্লাহ তা‘আলা তাকে এক রাতে খিলাফতের যোগ্য করবেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ্)
৩।Abu Saeed Al-Khudri has repoted that the Messenger of Allah (SAW) said "He (Imam Mahdi) will be sent at a time of intense disputes and differences among people and earthquakes..." (Ahmed)
৪।মুজাহিদ (রহঃ) বলেন যে, আমাকে নবী করীম (সাঃ) এর একজন সাহাবী বর্ণনা করেছেন যে, মাহদী ততক্ষন আসবেনা, যতক্ষন না পবিত্র আত্মাকে শহীদ করে ফেলা হবে। সুতরাং যখন পবিত্র আত্মাকে শহীদ করে ফেলা হবে, তখন যমীন-আসমানের সকল বাসিন্দাগণ হত্যাকারীদের উপর রাগান্বিত হয়ে যাবে। এরপর লোকেরা মাহদীর কাছে এসে তাকে এমন সুসজ্জিত(অনুসরণ) করবে, যেমননাকি নববধূকে সাজিয়ে বাসররাতে তার স্বামীর ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সে (মাহদী) জমিনকে ন্যায়পরায়ণতা ও ইনসাফের মাধ্যমে ভরে দেবে। তার সময়ে জমিন তার অভ্যন্তরে থাকা উদ্ভিদগুলোকে উত্তমরূপে প্রকাশ করবে এবং আসমান তার বরকতময় বৃষ্টি দ্বারা জমিনকে পূর্ণ করে দেবে। আমার উম্মত তার সময়ে এমন সুখ-স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপন করবে যে, এরকম সুখের জীবন তারা ইতিপূর্বে যাপন করেনি। (মুছান্নাফে ইবনে আবি শায়বা)
৫। ইমাম মাহদী পিতার দিক থেকে হবেন হযরত হাসান (রাঃ) এর বংশধর আর মায়ের দিক থেকে হযরত হুসাইন (রাঃ) এর বংশধর।
(আউনুল মা’বূদ সরহে আবী দাউদঃ কিতাবুল মাহদী)
৬। হযরত আবু ইসহাক (রহঃ) বর্ণনা করেন, হযরত আলী (রাঃ) স্বীয় পুত্র হযরত হাসান (রাঃ) এর প্রতি দৃষ্টিপাত করে বলেছিলেন, ‘আমার এই পুত্র সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) যেমনটি বলেছিলেন, এ জান্নাতি যুবকদের নেতা হবে। তেমনি অদূর ভবিষ্যতে এর বংশে এক ব্যক্তি জন্মলাভ করবে, যার নাম তোমার নবীর নাম হবে। স্বভাব ও চরিত্র নবীজি (সাঃ) এর অনুরূপ হবে। তবে বাহ্যিক আকার-গঠনে তার মতো হবে না’।
(সুনানে আবু দাউদ) (হাদীসটি দুর্বল)
৭। হযরত আবু সাইদ খুদরী (রাঃ) বলেন- নবী করীম (সাঃ) বলেসেন, যে মাহদি আমার সন্তানদের মধ্য থেকে হবে, উজ্জ্বল ও প্রশস্ত ললাটের অধিকারী, সুউচ্চ নাসিকাবিশিস্ট। সে বিশ্বকে ন্যায়-নিষ্ঠা ও ইনসাফের মাধ্যমে ভরে দেবে, যেমনভাবে ইতিপূর্বে জুলুম-অত্যাচারে ভরে দেয়া হয়েছিল। সাত বা নয় বৎসর পর্যন্ত সে মানুষের নেতৃত্ব দেবে।
(সুনানে আবু দাউদ )
৮। উম্মুল মুমিনিন হাফসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেনঃ “কাবা ঘরে আশ্রিত ব্যক্তির (ইমাম মাহদী) বিরুদ্ধে বিশাল বাহিনীর আগমন হবে। বায়দার প্রান্তরে পৌছা মাত্র বাহিনীর মধ্যভাগ ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে। সম্মুখভাগ পেছন ভাগের সেনাদেরকে ডাকাডাকি করতে থাকবে। পরক্ষনেই সম্পূর্ণ বাহিনীকে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে। ফলে সংবাদ বাহক একজন ছাড়া আর কেউ নিস্তার পাবে না।” (বুখারী)
৯।উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা রাসূল (সাঃ) কেমন যেন করছিলেন। জাগ্রত হওয়ার পর জিজ্ঞাসার করলাম, এমন কেন করছিলেন হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন, “খুবই আশ্চর্যের বিষয় – আমার উম্মতের কিছু লোক কাবা ঘরে আশ্রিত কুরায়শী ব্যক্তিকে (ইমাম মাহদী) হত্যার উদ্দেশ্যে রওনা হবে। বায়দা প্রান্তরে পৌছা মাত্র সবাইকে মাটির নিচে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে।”
আমরা বললাম, ‘পথে তো অনেক মানুষের সমাগম থাকে!!’
রাসূল (সাঃ) বললেন, “হ্যাঁ, দর্শক, অপারগ এবং পথিক সকলেই একত্রে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে। তবে অন্তর ইচ্ছা অনুযায়ী আল্লাহ পাক তাদের পুনরুত্থান করবেন।”(মুসলিম)
১০। উম্মুল মুমেনীন উম্মে সালমা (রাঃ) বলেন যে, আমি নবী করীম (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, একজন খলীফার মৃত্যুর পর বিরাট মতানৈক্য সৃষ্টি হবে। অতপর বনী হাশেম গোত্রের একজন ব্যক্তি পলায়ন করে মক্কায় চলে যাবে। লোকেরা (তাকে চিনে ফেলবে যে, সেই হচ্ছে আখেরী যমানার ইমাম মাহদি, তাই) তাকে ঘর থেকে বের করে এনে কা’বা শরীফে হজরে আসওয়াদ এবং মাকামে ইব্রাহীমের মধ্যবর্তী স্থানে অনিচ্ছা সত্ত্বেও তার হাতে বায়আত গ্রহন করবে।(ঐ বায়আতের খবর শুনে) শামদেশ থেকে একটি বাহিনী প্রেরন করা হবে। ঐ বাহিনী যখন “বায়দা” নামক স্থানে এসে পৌছাবে, তখন তাদেরকে মাটির নিচে ধ্বসিয়ে দেয়া হবে। অতপর মাহদীর কাছে ইরাকের ওলীয়াল্লাহগন এবং শামের আবদাল ব্যক্তিগন এসে মিলিত হবে।অতপর শামে(বর্তমান জর্ডান, ফিলিস্তীন, ইসরায়েল, সিরিয়া, লেবানন) একজন ব্যক্তির আবির্ভাব হবে, যার মামাদের সম্পর্ক হবে বনু কাল্বের সাথে।সে তার বাহিনীকে ঐ ব্যক্তির(বনী হাশেমের) বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রেরন করবে। আল্লাহ তা’লা ঐ বাহিনীকে পরাজিত করবেন। ফলে তার উপর কঠিন পরিস্থিতি আবর্তিত হবে। ওটাকেই বলা হবে “জঙ্গে কাল্ব”।আর যে ব্যক্তি বনু কাল্বের গনিমত থেকে বঞ্চিত থাক্ল,সেই আসল বঞ্চিত ব্যক্তি। অতপর সে (মাহদী) যমিনের ভাণ্ডারগুলো উন্মোচন করে মানুষের মাঝে বণ্টন করবে। ইসলাম পুনরায় পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠিত হবে। এভাবে সে(মাহদী) সাত বা নয় বৎসর ইসলামী শাসনব্যবস্থা পরিচালিত করবে।
(আল মু’জামুল আওসাত);;(মুসনাদে আবী ইয়ালা);;(ইবনে হিব্বান);;(আল মু’জামুল কাবির)
হাদিসটির বিশুদ্ধতার বিষয়ে মুহাদ্দিসগন মতভেদ করেছেন। আল্লামা ইবনুল কাইয়িম ও অন্যান্য মুহাদ্দিস হাদিসটিকে হাসান এবং সহীহ পর্যায়ের বলে উল্লেখ করেছেন। পক্ষান্তরে শাইখ আলবানী হাদীসটিকে যয়ীফ বলে উল্লেখ করেছেন।
১১। হযরত সাওবান (রাঃ) হতে বর্ণিত নবী করীম (সাঃ) এরশাদ করেন- তোমাদের খনিজ ভাণ্ডারের কাছে তিন ব্যক্তি(তিনটি বড় বাহিনী) যুদ্ধ করবে। তিনজনই শাসকের ছেলে হবে। খনিজভাণ্ডার কারো কাছেই স্থনান্তরিত হবে না। এরপর পূর্ব দিক থেকে কালো ঝান্দাবাহী লোকেরা আগমন করবে। তারা তোমাদের বিরুদ্ধে এত কঠোরভাবে যুদ্ধ করবে যে, এমন যুদ্ধ ইতিপূর্বে কেউ করতে সক্ষম হয়নি।(বর্ণনাকারী বলেন) এরপর তিনি(সাঃ) কি যেন বললেন, আমি বুঝে উঠতে পারিনি।(ইবনে মাজা’র বর্ণনায় এর বিবরণ এসেছে যে,) অতপর আল্লাহর প্রতিনিধি ইমাম মাহদী আত্মপ্রকাশ ঘটবে। তিনি বলেন যে, যখন তোমরা তাকে দেখতে পাবে, তখন তার হাতে বায়আত হয়ে যেয়ো!(অর্থাৎ তার বাহিনীতে এসে শরীক হয়ে যেয়ো!)যদিও তা করার জন্য তোমাদেরকে দূরদূরান্ত এলাকা থেকে বরফের পাহাড়ের উপর দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে আসা লাগে।
(সুনানে ইবনে মাজা);;(মুসতাদরাকে হাকেম)
ইমাম বাযযার, হাকিম নাইসাপূরী, যাহাবী, বূসীরী, সুয়ূতী ও অন্যান্য মুহাদ্দিস হাদিসটিকে সহিহ বলেসেন। শাইখ আলবানী হাদিসটির শেষ বাক্যটিকে যয়ীফ বলেছেন।
১২। হযরত আমর বিন শুআইব, তার পিতা, তারা দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম (সাঃ) বলেসেন- যিলকা’দা মাসে বংশীয় গোত্রসমূহের মাঝে পারস্পরিক মতানৈক্য দেখা দেবে। ফলশ্রুতিতে হাজ্বীদেরকে লুট করা হবে। মিনা প্রান্তরে যুদ্ধ সংঘটিত হবে। তাতে প্রচুর পরিমাণে হত্যাযজ্ঞ হবে। রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। শেষপর্যন্ত “আকবাতুল জামরা”তেও রক্ত বইতে থাকবে। পরিস্থিতি এই পর্যন্ত পৌছাবে যে, তাদের সাথী(ইমাম মাহদী) পালিয়ে কা’বা শরীফের “রূকুন” এবং মাকামে ইব্রাহীমের মাঝামাঝি স্থানে আসবে। অতপর তার ইচ্ছার বিরুদ্ধেই তার হাতে সকলকে বায়আত করা হবে। তাকে বলা হবে যে, আপনি আমাদের বায়আত নিতে অস্বীকার করলে আমরা আপনার গর্দান উড়িয়ে দেব। অতপর বদর যুদ্ধাদের সংখ্যা পরিমাণ(৩১৩ জন) লোক উনার হাতে বায়আত গ্রহন করবে। তাদের প্রতি আসমান ও যমিনের বাসিন্দাগণ সকলেই খুশি থাকবে।
(মুসতাদরাকে হাকেম)
১৩। হযরত ফিরোজ দাইলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবী করীম (সাঃ) এরশাদ করেন- রমযান মাসে একটি বিরাট আওয়াজ হবে। সাহাবায়ে কেরাম (রা) বললেন-রমযানের শুরুতে ?? মাঝে?? নাকি শেষে?? উত্তরে বললেন- বরং রমযানের মাঝামাঝিতে। যখন ১৫ই রমযানের রাত্রিটি জুমা’র রাত্রি(অর্থাৎ শুক্রবার) হবে, তখন আসমান থেকে একটি বিকট আওয়াজ আসবে। এই আওয়াজ শুনে সত্তর হাজার(আরবীতে অসংখ্য বুঝাচ্ছে) লোক তৎক্ষণাৎ বেহুঁশ হয়ে যাবে। অন্য সত্তর হাজার লোক বোবা হয়ে যাবে। অপর সত্তর হাজার অন্ধ হয়ে যাবে। সত্তর হাজার বধির হয়ে যাবে। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন-তাহলে উম্মতের মধ্যে কারা বাঁচতে সক্ষম হবে?? উত্তরে বললেন-যারা নিজেদের ঘরে অবস্থান করে সেজদায় গিয়ে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে এবং স্বজরে তাকবীর(আল্লাহ আকবার) বলতে থাকবে। এরপর আরেকটি আওয়াজ আসবে। প্রথমটি আওয়াজটি হবে জিব্রাঈলের। দ্বিতীয় আওয়াজটি হবে শয়তানের।(ঘটনার ধারাবাহিকতা এই হবে-) বিকট আওয়াজ আসবে রমযান মাসে। প্রচণ্ড যুদ্ধ হবে শাওয়াল মাসে। আর হাজ্বীদেরকে লুট করা হবে যিলহজ্ব মাসে। বাকী রইল মুহাররাম মাস। সুতরাং মুহাররাম মাসের প্রাথমিক দিনগুলি আমার উম্মতের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ হবে। আর শেষ দিনগুলো উম্মতের জন্য মুক্তির দিন হবে। সেদিন মুসলমানদের কাযওয়া’বিশিষ্ট আরোহণগুলি(যার মাধ্যমে তারা মুক্তি পাবে) তাদের জন্য এক লাখ দীনারের চেয়েও বেশি দামী বিলাসী বাড়ী অপেক্ষা উত্তম হবে।
(মাজমাউজ জাওয়ায়েদ)
১৪। হযরত ছাউবান (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সাঃ) বলেন- যখন তোমরা দেখতে পাবে যে, কালো ঝাণ্ডাবাহী লোকেরা খোরাসানের দিক থেকে আগমন করেছে, তখন তোমরাও তাতে শামিল হয়ে যেও!! কেননা, তাদের মধ্যেই আল্লাহর খলীফা ‘মাহদী’ বিদ্যমান। (মুসনাদে আহমাদ) **এখানে খোরাসানের দলটি মাহদীর সাথে যুক্ত হবে বুঝানো হয়েছে। আল্লাহ্ই ভাল জানেন।**
১৫। হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন যে, কিয়ামতের পূর্বে এ ঘটনাটি অবশ্যই সংঘটিত হয়ে থাকবে যে, রূমান সৈনিকরা “আ’মাক” বা “দাবেক” প্রান্তরে এসে একত্রিত হবে। তখন শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত একটি মুসলিম বাহিনী রূমানদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য মদীনা থেকে রওয়ানা হবে। অতপর যখন উভয় দল’ই যুদ্ধের জন্য কাতারবন্দী হবে, তখন রূমীগন মুসলমানদের উদ্দেশ্যে বলবে যে, তোমরা আমাদের এবং ঐ সকল লোকদের মধ্যে বাধা হয়ে এসোনা! যারা আমাদের লোকদেরকে বন্দি করে নিয়ে এসেছে। তখন মুসলমানগণ বলবে যে, আল্লাহর শপথ! অবশ্যই আমরা আমদের ভাইদেরকে ছেড়ে সরে যাব না। অতপর তোমরা(মুসলমানগণ) তাদের সাথে যুদ্ধ করবে। যুদ্ধের মধ্যে (মুসলমানদের) এক-তৃতীয়াংশ ব্যক্তি পালিয়ে যাবে, যাদের তাওবা’কে আল্লাহ তা’আলা কখনো কবুল করবেন না। আর এক-তৃতীয়াংশ ব্যক্তি শহীদ হয়ে যাবে, আল্লাহ তা’আলার কাছে তারা সর্ব উত্তম শহিদ হিসেবে বিবেচিত হবে। অবশিষ্ট এক-তৃতীয়াংশের হাতে আল্লাহ পাক বিজয় দান করবেন, যাদেরকে পরবর্তীতে কখনোই ফেতনা গ্রাস করতে পারবেনা। অতপর তারা কুস্তান্তীনীয়্যা বিজয় করবে।(অন্য বরননায়-রূমও বিজয় করবে) অতপর তারা স্বীয় তরবারীগুলো যাইতুন বৃক্ষের সাথে ঝুলিয়ে যুদ্ধলব্ধ মালকে বণ্টন করতে থাকবে, এমনসময় শয়তান এসে ঘোষণা করবে যে, “ওদিকে দাজ্জাল এসে তোমাদের ঘরবাড়ীতে প্রবেশ করে ফেলেছে।” তা শুনামাত্রই ওখান থেকে বাহিনী রওয়ানা হয়ে যাবে। যদিও সংবাদটি তখন মিথ্যা হবে, কিন্তু মুসলমানগণ যখন শামে এসে পৌছবে, তখন ঠিকই দাজ্জাল আত্মপ্রকাশ করে ফেলবে। অতপর মুসলমানগণ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি এবং কাতারগুলি সোজা করতে থাকবে, এমতাবস্থায় ফজরের নামাজের জন্য একামত দেয়া হবে, ঠিক তখনই ঈসা (আঃ) আসমান থেকে অবতরণ করবেন এবং মুসলমানদের আমীর (ইমাম মাহদী) কে ফজরের নামাজে ইমামতি করার আদেশ করবেন। আল্লাহর দুশমন (দাজ্জাল), ঈসা (আঃ) কে দেখে এমনভাবে গলে যাবে, যেমন নাকি লবণ পানিতে পড়ে গলে যায়। তিনি যদি তাকে এই অবস্থায় ছেড়ে দিতেন, তাহলে সে সম্পূর্ণ গলে ধ্বংসে হয়ে যেত। কিন্তু আল্লাহ তা’আলা তাকে ঈসা (আঃ) এর হাতেই হত্যা করবেন। হত্যার পর তিনি মানুষের কাছে এসে স্বীয় বর্শায় দাজ্জালের রক্ত দেখাবেন।
(মুসলিম);;(সহিহ ইবনে হিব্বান)
******ইমাম মাহদী সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি হাদিস******
১। হযরত আবু সাইদ খুদরী (রাঃ) বলেন- নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, শেষ যামানায় তোমাদের একজন রাষ্ট্রপ্রধান(খলীফা) হবে। সে দুই হাতে প্রচুর ধন-সম্পদ বিলি-বন্টন করবেঃ কিন্তু তার কোন হিসাব রাখবে না। (মুসলিম)২। আলী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ মাহ্দী আমাদের আহলে বাইত থেকে হবে। আল্লাহ তা‘আলা তাকে এক রাতে খিলাফতের যোগ্য করবেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ্)
৩।Abu Saeed Al-Khudri has repoted that the Messenger of Allah (SAW) said "He (Imam Mahdi) will be sent at a time of intense disputes and differences among people and earthquakes..." (Ahmed)
৪।মুজাহিদ (রহঃ) বলেন যে, আমাকে নবী করীম (সাঃ) এর একজন সাহাবী বর্ণনা করেছেন যে, মাহদী ততক্ষন আসবেনা, যতক্ষন না পবিত্র আত্মাকে শহীদ করে ফেলা হবে। সুতরাং যখন পবিত্র আত্মাকে শহীদ করে ফেলা হবে, তখন যমীন-আসমানের সকল বাসিন্দাগণ হত্যাকারীদের উপর রাগান্বিত হয়ে যাবে। এরপর লোকেরা মাহদীর কাছে এসে তাকে এমন সুসজ্জিত(অনুসরণ) করবে, যেমননাকি নববধূকে সাজিয়ে বাসররাতে তার স্বামীর ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সে (মাহদী) জমিনকে ন্যায়পরায়ণতা ও ইনসাফের মাধ্যমে ভরে দেবে। তার সময়ে জমিন তার অভ্যন্তরে থাকা উদ্ভিদগুলোকে উত্তমরূপে প্রকাশ করবে এবং আসমান তার বরকতময় বৃষ্টি দ্বারা জমিনকে পূর্ণ করে দেবে। আমার উম্মত তার সময়ে এমন সুখ-স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপন করবে যে, এরকম সুখের জীবন তারা ইতিপূর্বে যাপন করেনি। (মুছান্নাফে ইবনে আবি শায়বা)
৫। ইমাম মাহদী পিতার দিক থেকে হবেন হযরত হাসান (রাঃ) এর বংশধর আর মায়ের দিক থেকে হযরত হুসাইন (রাঃ) এর বংশধর।
(আউনুল মা’বূদ সরহে আবী দাউদঃ কিতাবুল মাহদী)
৬। হযরত আবু ইসহাক (রহঃ) বর্ণনা করেন, হযরত আলী (রাঃ) স্বীয় পুত্র হযরত হাসান (রাঃ) এর প্রতি দৃষ্টিপাত করে বলেছিলেন, ‘আমার এই পুত্র সম্পর্কে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) যেমনটি বলেছিলেন, এ জান্নাতি যুবকদের নেতা হবে। তেমনি অদূর ভবিষ্যতে এর বংশে এক ব্যক্তি জন্মলাভ করবে, যার নাম তোমার নবীর নাম হবে। স্বভাব ও চরিত্র নবীজি (সাঃ) এর অনুরূপ হবে। তবে বাহ্যিক আকার-গঠনে তার মতো হবে না’।
(সুনানে আবু দাউদ) (হাদীসটি দুর্বল)
৭। হযরত আবু সাইদ খুদরী (রাঃ) বলেন- নবী করীম (সাঃ) বলেসেন, যে মাহদি আমার সন্তানদের মধ্য থেকে হবে, উজ্জ্বল ও প্রশস্ত ললাটের অধিকারী, সুউচ্চ নাসিকাবিশিস্ট। সে বিশ্বকে ন্যায়-নিষ্ঠা ও ইনসাফের মাধ্যমে ভরে দেবে, যেমনভাবে ইতিপূর্বে জুলুম-অত্যাচারে ভরে দেয়া হয়েছিল। সাত বা নয় বৎসর পর্যন্ত সে মানুষের নেতৃত্ব দেবে।
(সুনানে আবু দাউদ )
৮। উম্মুল মুমিনিন হাফসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেনঃ “কাবা ঘরে আশ্রিত ব্যক্তির (ইমাম মাহদী) বিরুদ্ধে বিশাল বাহিনীর আগমন হবে। বায়দার প্রান্তরে পৌছা মাত্র বাহিনীর মধ্যভাগ ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে। সম্মুখভাগ পেছন ভাগের সেনাদেরকে ডাকাডাকি করতে থাকবে। পরক্ষনেই সম্পূর্ণ বাহিনীকে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে। ফলে সংবাদ বাহক একজন ছাড়া আর কেউ নিস্তার পাবে না।” (বুখারী)
৯।উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রাঃ) বলেন, একদা রাসূল (সাঃ) কেমন যেন করছিলেন। জাগ্রত হওয়ার পর জিজ্ঞাসার করলাম, এমন কেন করছিলেন হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন, “খুবই আশ্চর্যের বিষয় – আমার উম্মতের কিছু লোক কাবা ঘরে আশ্রিত কুরায়শী ব্যক্তিকে (ইমাম মাহদী) হত্যার উদ্দেশ্যে রওনা হবে। বায়দা প্রান্তরে পৌছা মাত্র সবাইকে মাটির নিচে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে।”
আমরা বললাম, ‘পথে তো অনেক মানুষের সমাগম থাকে!!’
রাসূল (সাঃ) বললেন, “হ্যাঁ, দর্শক, অপারগ এবং পথিক সকলেই একত্রে ধ্বসিয়ে দেওয়া হবে। তবে অন্তর ইচ্ছা অনুযায়ী আল্লাহ পাক তাদের পুনরুত্থান করবেন।”(মুসলিম)
১০। উম্মুল মুমেনীন উম্মে সালমা (রাঃ) বলেন যে, আমি নবী করীম (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, একজন খলীফার মৃত্যুর পর বিরাট মতানৈক্য সৃষ্টি হবে। অতপর বনী হাশেম গোত্রের একজন ব্যক্তি পলায়ন করে মক্কায় চলে যাবে। লোকেরা (তাকে চিনে ফেলবে যে, সেই হচ্ছে আখেরী যমানার ইমাম মাহদি, তাই) তাকে ঘর থেকে বের করে এনে কা’বা শরীফে হজরে আসওয়াদ এবং মাকামে ইব্রাহীমের মধ্যবর্তী স্থানে অনিচ্ছা সত্ত্বেও তার হাতে বায়আত গ্রহন করবে।(ঐ বায়আতের খবর শুনে) শামদেশ থেকে একটি বাহিনী প্রেরন করা হবে। ঐ বাহিনী যখন “বায়দা” নামক স্থানে এসে পৌছাবে, তখন তাদেরকে মাটির নিচে ধ্বসিয়ে দেয়া হবে। অতপর মাহদীর কাছে ইরাকের ওলীয়াল্লাহগন এবং শামের আবদাল ব্যক্তিগন এসে মিলিত হবে।অতপর শামে(বর্তমান জর্ডান, ফিলিস্তীন, ইসরায়েল, সিরিয়া, লেবানন) একজন ব্যক্তির আবির্ভাব হবে, যার মামাদের সম্পর্ক হবে বনু কাল্বের সাথে।সে তার বাহিনীকে ঐ ব্যক্তির(বনী হাশেমের) বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রেরন করবে। আল্লাহ তা’লা ঐ বাহিনীকে পরাজিত করবেন। ফলে তার উপর কঠিন পরিস্থিতি আবর্তিত হবে। ওটাকেই বলা হবে “জঙ্গে কাল্ব”।আর যে ব্যক্তি বনু কাল্বের গনিমত থেকে বঞ্চিত থাক্ল,সেই আসল বঞ্চিত ব্যক্তি। অতপর সে (মাহদী) যমিনের ভাণ্ডারগুলো উন্মোচন করে মানুষের মাঝে বণ্টন করবে। ইসলাম পুনরায় পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠিত হবে। এভাবে সে(মাহদী) সাত বা নয় বৎসর ইসলামী শাসনব্যবস্থা পরিচালিত করবে।
(আল মু’জামুল আওসাত);;(মুসনাদে আবী ইয়ালা);;(ইবনে হিব্বান);;(আল মু’জামুল কাবির)
হাদিসটির বিশুদ্ধতার বিষয়ে মুহাদ্দিসগন মতভেদ করেছেন। আল্লামা ইবনুল কাইয়িম ও অন্যান্য মুহাদ্দিস হাদিসটিকে হাসান এবং সহীহ পর্যায়ের বলে উল্লেখ করেছেন। পক্ষান্তরে শাইখ আলবানী হাদীসটিকে যয়ীফ বলে উল্লেখ করেছেন।
১১। হযরত সাওবান (রাঃ) হতে বর্ণিত নবী করীম (সাঃ) এরশাদ করেন- তোমাদের খনিজ ভাণ্ডারের কাছে তিন ব্যক্তি(তিনটি বড় বাহিনী) যুদ্ধ করবে। তিনজনই শাসকের ছেলে হবে। খনিজভাণ্ডার কারো কাছেই স্থনান্তরিত হবে না। এরপর পূর্ব দিক থেকে কালো ঝান্দাবাহী লোকেরা আগমন করবে। তারা তোমাদের বিরুদ্ধে এত কঠোরভাবে যুদ্ধ করবে যে, এমন যুদ্ধ ইতিপূর্বে কেউ করতে সক্ষম হয়নি।(বর্ণনাকারী বলেন) এরপর তিনি(সাঃ) কি যেন বললেন, আমি বুঝে উঠতে পারিনি।(ইবনে মাজা’র বর্ণনায় এর বিবরণ এসেছে যে,) অতপর আল্লাহর প্রতিনিধি ইমাম মাহদী আত্মপ্রকাশ ঘটবে। তিনি বলেন যে, যখন তোমরা তাকে দেখতে পাবে, তখন তার হাতে বায়আত হয়ে যেয়ো!(অর্থাৎ তার বাহিনীতে এসে শরীক হয়ে যেয়ো!)যদিও তা করার জন্য তোমাদেরকে দূরদূরান্ত এলাকা থেকে বরফের পাহাড়ের উপর দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে আসা লাগে।
(সুনানে ইবনে মাজা);;(মুসতাদরাকে হাকেম)
ইমাম বাযযার, হাকিম নাইসাপূরী, যাহাবী, বূসীরী, সুয়ূতী ও অন্যান্য মুহাদ্দিস হাদিসটিকে সহিহ বলেসেন। শাইখ আলবানী হাদিসটির শেষ বাক্যটিকে যয়ীফ বলেছেন।
১২। হযরত আমর বিন শুআইব, তার পিতা, তারা দাদা থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী করীম (সাঃ) বলেসেন- যিলকা’দা মাসে বংশীয় গোত্রসমূহের মাঝে পারস্পরিক মতানৈক্য দেখা দেবে। ফলশ্রুতিতে হাজ্বীদেরকে লুট করা হবে। মিনা প্রান্তরে যুদ্ধ সংঘটিত হবে। তাতে প্রচুর পরিমাণে হত্যাযজ্ঞ হবে। রক্তের বন্যা বয়ে যাবে। শেষপর্যন্ত “আকবাতুল জামরা”তেও রক্ত বইতে থাকবে। পরিস্থিতি এই পর্যন্ত পৌছাবে যে, তাদের সাথী(ইমাম মাহদী) পালিয়ে কা’বা শরীফের “রূকুন” এবং মাকামে ইব্রাহীমের মাঝামাঝি স্থানে আসবে। অতপর তার ইচ্ছার বিরুদ্ধেই তার হাতে সকলকে বায়আত করা হবে। তাকে বলা হবে যে, আপনি আমাদের বায়আত নিতে অস্বীকার করলে আমরা আপনার গর্দান উড়িয়ে দেব। অতপর বদর যুদ্ধাদের সংখ্যা পরিমাণ(৩১৩ জন) লোক উনার হাতে বায়আত গ্রহন করবে। তাদের প্রতি আসমান ও যমিনের বাসিন্দাগণ সকলেই খুশি থাকবে।
(মুসতাদরাকে হাকেম)
১৩। হযরত ফিরোজ দাইলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত নবী করীম (সাঃ) এরশাদ করেন- রমযান মাসে একটি বিরাট আওয়াজ হবে। সাহাবায়ে কেরাম (রা) বললেন-রমযানের শুরুতে ?? মাঝে?? নাকি শেষে?? উত্তরে বললেন- বরং রমযানের মাঝামাঝিতে। যখন ১৫ই রমযানের রাত্রিটি জুমা’র রাত্রি(অর্থাৎ শুক্রবার) হবে, তখন আসমান থেকে একটি বিকট আওয়াজ আসবে। এই আওয়াজ শুনে সত্তর হাজার(আরবীতে অসংখ্য বুঝাচ্ছে) লোক তৎক্ষণাৎ বেহুঁশ হয়ে যাবে। অন্য সত্তর হাজার লোক বোবা হয়ে যাবে। অপর সত্তর হাজার অন্ধ হয়ে যাবে। সত্তর হাজার বধির হয়ে যাবে। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন-তাহলে উম্মতের মধ্যে কারা বাঁচতে সক্ষম হবে?? উত্তরে বললেন-যারা নিজেদের ঘরে অবস্থান করে সেজদায় গিয়ে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে এবং স্বজরে তাকবীর(আল্লাহ আকবার) বলতে থাকবে। এরপর আরেকটি আওয়াজ আসবে। প্রথমটি আওয়াজটি হবে জিব্রাঈলের। দ্বিতীয় আওয়াজটি হবে শয়তানের।(ঘটনার ধারাবাহিকতা এই হবে-) বিকট আওয়াজ আসবে রমযান মাসে। প্রচণ্ড যুদ্ধ হবে শাওয়াল মাসে। আর হাজ্বীদেরকে লুট করা হবে যিলহজ্ব মাসে। বাকী রইল মুহাররাম মাস। সুতরাং মুহাররাম মাসের প্রাথমিক দিনগুলি আমার উম্মতের জন্য পরীক্ষাস্বরূপ হবে। আর শেষ দিনগুলো উম্মতের জন্য মুক্তির দিন হবে। সেদিন মুসলমানদের কাযওয়া’বিশিষ্ট আরোহণগুলি(যার মাধ্যমে তারা মুক্তি পাবে) তাদের জন্য এক লাখ দীনারের চেয়েও বেশি দামী বিলাসী বাড়ী অপেক্ষা উত্তম হবে।
(মাজমাউজ জাওয়ায়েদ)
১৪। হযরত ছাউবান (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সাঃ) বলেন- যখন তোমরা দেখতে পাবে যে, কালো ঝাণ্ডাবাহী লোকেরা খোরাসানের দিক থেকে আগমন করেছে, তখন তোমরাও তাতে শামিল হয়ে যেও!! কেননা, তাদের মধ্যেই আল্লাহর খলীফা ‘মাহদী’ বিদ্যমান। (মুসনাদে আহমাদ) **এখানে খোরাসানের দলটি মাহদীর সাথে যুক্ত হবে বুঝানো হয়েছে। আল্লাহ্ই ভাল জানেন।**
১৫। হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন যে, কিয়ামতের পূর্বে এ ঘটনাটি অবশ্যই সংঘটিত হয়ে থাকবে যে, রূমান সৈনিকরা “আ’মাক” বা “দাবেক” প্রান্তরে এসে একত্রিত হবে। তখন শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত একটি মুসলিম বাহিনী রূমানদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য মদীনা থেকে রওয়ানা হবে। অতপর যখন উভয় দল’ই যুদ্ধের জন্য কাতারবন্দী হবে, তখন রূমীগন মুসলমানদের উদ্দেশ্যে বলবে যে, তোমরা আমাদের এবং ঐ সকল লোকদের মধ্যে বাধা হয়ে এসোনা! যারা আমাদের লোকদেরকে বন্দি করে নিয়ে এসেছে। তখন মুসলমানগণ বলবে যে, আল্লাহর শপথ! অবশ্যই আমরা আমদের ভাইদেরকে ছেড়ে সরে যাব না। অতপর তোমরা(মুসলমানগণ) তাদের সাথে যুদ্ধ করবে। যুদ্ধের মধ্যে (মুসলমানদের) এক-তৃতীয়াংশ ব্যক্তি পালিয়ে যাবে, যাদের তাওবা’কে আল্লাহ তা’আলা কখনো কবুল করবেন না। আর এক-তৃতীয়াংশ ব্যক্তি শহীদ হয়ে যাবে, আল্লাহ তা’আলার কাছে তারা সর্ব উত্তম শহিদ হিসেবে বিবেচিত হবে। অবশিষ্ট এক-তৃতীয়াংশের হাতে আল্লাহ পাক বিজয় দান করবেন, যাদেরকে পরবর্তীতে কখনোই ফেতনা গ্রাস করতে পারবেনা। অতপর তারা কুস্তান্তীনীয়্যা বিজয় করবে।(অন্য বরননায়-রূমও বিজয় করবে) অতপর তারা স্বীয় তরবারীগুলো যাইতুন বৃক্ষের সাথে ঝুলিয়ে যুদ্ধলব্ধ মালকে বণ্টন করতে থাকবে, এমনসময় শয়তান এসে ঘোষণা করবে যে, “ওদিকে দাজ্জাল এসে তোমাদের ঘরবাড়ীতে প্রবেশ করে ফেলেছে।” তা শুনামাত্রই ওখান থেকে বাহিনী রওয়ানা হয়ে যাবে। যদিও সংবাদটি তখন মিথ্যা হবে, কিন্তু মুসলমানগণ যখন শামে এসে পৌছবে, তখন ঠিকই দাজ্জাল আত্মপ্রকাশ করে ফেলবে। অতপর মুসলমানগণ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি এবং কাতারগুলি সোজা করতে থাকবে, এমতাবস্থায় ফজরের নামাজের জন্য একামত দেয়া হবে, ঠিক তখনই ঈসা (আঃ) আসমান থেকে অবতরণ করবেন এবং মুসলমানদের আমীর (ইমাম মাহদী) কে ফজরের নামাজে ইমামতি করার আদেশ করবেন। আল্লাহর দুশমন (দাজ্জাল), ঈসা (আঃ) কে দেখে এমনভাবে গলে যাবে, যেমন নাকি লবণ পানিতে পড়ে গলে যায়। তিনি যদি তাকে এই অবস্থায় ছেড়ে দিতেন, তাহলে সে সম্পূর্ণ গলে ধ্বংসে হয়ে যেত। কিন্তু আল্লাহ তা’আলা তাকে ঈসা (আঃ) এর হাতেই হত্যা করবেন। হত্যার পর তিনি মানুষের কাছে এসে স্বীয় বর্শায় দাজ্জালের রক্ত দেখাবেন।
(মুসলিম);;(সহিহ ইবনে হিব্বান)
No comments:
Post a Comment